প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ শহরে বাস করছে
- আপলোড সময় : ২৮-০৯-২০২৫ ০২:১৬:১৫ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৮-০৯-২০২৫ ০২:১৬:১৫ অপরাহ্ন

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
বাংলাদেশ দ্রুত নগরায়ণের দিকে এগোচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ শহরে বাস করছে এবং আগামী দুই দশকে এটি ৬০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। দেশের নগরায়ণ ৬০-এর দশকে শুরু হয়; সেই সময় নগরায়ণের হার ছিল মাত্র ৫.১৪ শতাংশ, যা ৯০-এর দশকে বেড়ে ১৯.৮ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে প্রায় ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে। নগরে অতিরিক্ত মানুষের চাপের কারণে সৃষ্ট সমস্যা নিরসনে সমগ্র বাংলাদেশে সুষম নগরায়ণ ও উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিতকরণের বিকল্প নেই বলে অভিমত উঠে এসেছে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)-র উদ্যোগে “বাংলাদেশের সুষম নগরায়ণ ও উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ: নীতি ও পরিকল্পনা প্রস্তাবনা” শীর্ষক ‘পরিকল্পনা সংলাপ’ বিআইপি কনফারেন্স হলে আগত অতিথিরা এসব মতামত দেন।
সংলাপে বিআইপি’র সাধারণ স¤পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসানের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন ইনস্টিটিউটের সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিআইপির যুগ্ম স¤পাদক পরিকল্পনাবিদ তামজিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে দেশবরেণ্য পরিকল্পনা পেশাজীবী ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ আলোচকবৃন্দ তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)-র যুগ্ম স¤পাদক, পরিকল্পনাবিদ তামজিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ দ্রুত নগরায়ণের দিকে এগোচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ শহরে বসবাস করছে এবং আগামী দুই দশকে এটি ৬০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবে নগরায়ণ মূলত ঢাকা ও আংশিকভাবে চট্টগ্রামে কেন্দ্রীভূত হওয়ায় ঢাকায় ঘনবসতি, যানজট, পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংকট এবং পরিবেশগত চাপ বেড়েছে। আঞ্চলিক শহরগুলো যেমন খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী, রংপুর এবং উপজেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ না থাকার কারণে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বৈষম্য দেখা দিচ্ছে। ফলশ্রুতিতে, এসব সমস্যা নিরসনে সমগ্র বাংলাদেশে সুষম নগরায়ণ ও উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিতকরণের বিকল্প নেই।
পরিকল্পনাবিদ মো. আনিসুর রহমান তুহিন সংলাপের মূল প্রবন্ধে জানান, বাংলাদেশে নগরায়ণ ৬০ -এর দশকে শুরু হয়; সেই সময় নগরায়ণের হার ছিল মাত্র ৫.১৪%, যা ৯০-এর দশকে বেড়ে ১৯.৮% এবং ২০২৩ সালে প্রায় ৪০% এ পৌঁছেছে। তিনি উল্লেখ করেন, নগরায়ণকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক বিকেন্দ্রীকরণ সহ বিভিন্ন বিকল্প পন্থা প্রয়োগ করা যেতে পারে।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-এর প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ, পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, কার্যকর ও বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং সারাদেশে সুষম অর্থনৈতিক উন্নয়ন অপরিহার্য। অঞ্চলভিত্তিক কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ তৈরি না হলে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ কার্যকর করা কঠিন হবে।
পরিকল্পনা ও উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘসূত্রিতা কমানো এবং কেন্দ্রীয় প্রশাসনের পাশাপাশি আঞ্চলিক প্রশাসনিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠা করলে বিকেন্দ্রীকরণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে। রাষ্ট্র যদি অঞ্চল ভিত্তিক সুষম শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারে, তবে রাজধানী সহ প্রধান শহরগুলোর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার ঘনত্ব নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)-এর সভাপতি, পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর গঠিত বর্তমান সরকার উন্নয়নের এজেন্ডা বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ মুখে বিকেন্দ্রীকরণের কথা বললেও বাস্তবে তারা ঢাকার উন্নয়ন কেন্দ্রিক কর্মকা-েই সীমাবদ্ধ থাকেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ